বাজারে বিদ্যমান ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সবার ওপরে অবস্থান করছে। আবার এ অস্থিরতাই বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেয়া থেকে বিরত রাখছে। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায়। আবার অনেকে একেবারেই ঝুঁকিহীন হয়ে বিনিয়োগ করছেন।
বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি আরো কঠোর করবে। সুদের হার আরো বাড়ানো হতে পারে। বাজার প্রাক্কলন অনুযায়ী, ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামীকাল ৭৫ বেসিস পয়েন্টে সুদের হার বাড়াতে পারে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অব ইংল্যান্ড পলিসি রেট ১০০ বেসিস পয়েন্টে বাড়াতে পারে।
অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় সর্বশেষ সপ্তাহেও বিশ্ববাজারে মূল্যহ্রাসে পণ্য বিক্রি অব্যাহত ছিল। প্রায় সব ধরনের পণ্যের দামে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি ও মন্দার উদ্বেগ এবং বাড়তি সুদের হারের কারণে বাড়ছে বন্ড ইল্ড। খবর আনাদোলু এজেন্সি।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ব্রিটেনের বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি গত মাসে ১০ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। জুলাইয়ে এটি বেড়ে ৪০ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছিল। মূল্যস্ফীতি আবারো সে পথেই হাঁটছে। সর্বশেষ বৈঠকে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বেজ রেট ৫০ বেসিস পয়েন্টে বাড়িয়ে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল। এ নিয়ে টানা সাত মাস সুদের হার বাড়ানো হলো।
অন্যদিকে চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও আন্তর্জাতিক পণ্যবাজারকে চাপের মুখে ফেলেছে। দেশটির জিরো কভিড নীতির কারণে অর্থনীতির গতি মন্থর হয়ে পড়েছে।
পণ্যবাজারে অব্যাহত নিম্নমুখী চাপ সত্ত্বেও গত সপ্তাহে মূল্যবান ধাতুর দাম বেড়েছে। এর মধ্যে স্বর্ণের দাম দশমিক ৯ শতাংশ, রুপার ৬ দশমিক ২, প্লাটিনামের ৩ দশমিক ৮ ও প্যালাডিয়ামের দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
তবে তামার দাম ১ দশমিক ৯ শতাংশ, অ্যালুমিনিয়ামের ৪ দশমিক ৪, সিসার ৭ দশমিক ৪, নিকেলের দশমিক ৮ ও দস্তার দাম ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে।গত সপ্তাহে জ্বালানি পণ্যের বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গিয়েছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ১ শতাংশ বেড়েছে। তবে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ২৩ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে।কৃষিপণ্যের মধ্যে শিকাগো মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে গমের দাম ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। এছাড়া ভুট্টার দাম দশমিক ৯ এবং চালের দাম ২ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। তবে সয়াবিনের দাম ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে তুলার দাম কমে দুই বছরের সর্বনিম্নে নেমেছে। গত সপ্তাহে পণ্যটির দাম কমেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। কফির দাম কমে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বনিম্নে নেমেছে। গত সপ্তাহে পণ্যটির দাম ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। তীব্র খরার কারণে উগান্ডার কফি রফতানিতে ধস নেমেছে। বাজারে নিম্নমুখী চাপের ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রধান ভূমিকা রেখেছে। চিনির দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কোকোর দাম ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে।