শতাধিক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যতম দুই দল ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে। এইবারের ৬০তম নির্বাচনেও এই ধারায় কোন পরিবর্তন আসতে দেখা যায়নি। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাড্ডহাড্ডি লড়াইটা এই দু’জন বা দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এই দুই দলের কট্টর সমর্থকের সংখ্যা প্রায় সমান এবং তারাই দেশটির ভোট ব্যাংকের সিংহভাগ দখল করে রয়েছেন।
প্রভাবশালী এই দুই প্রার্থীর সমর্থক ছাড়াও অন্য চার প্রার্থীর সামান্য কিছু নেতাকর্মী এবং সমর্থক রয়েছে। এসব প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তো দূরের কথা তাদের দল বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলতে পারবেন এমন মার্কিন ভোটার খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রধান দুই দলের কট্টর সমর্থকদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে গণনা করা চ্যালেঞ্জিং। তবে কিছু জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান দুই দলেরই কট্টর সমর্থক সমান যা ২৫-৩০ শতাংশ।
এদিকে, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন ভোটাররা সাধারণত প্রার্থীর যোগ্যতা অথবা দলীয় গৌরব দুই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। তবে ভোটারদের মনোভাব এবং তাদের ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।
প্রার্থীর যোগ্যতা: অনেক ভোটারই প্রার্থীর নেতৃত্বের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতার ওপর বেশি নজর দেন।
অনেক ক্ষেত্রে ভোটাররা তাদের জীবন-জীবিকা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা এবং বিষয়ের প্রতি প্রার্থীর মনোযোগ বিবেচনায় রাখেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রার্থীর পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি ভোটারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে, দলের গৌরবকে বিবেচনায় নিয়ে অনেক ভোটার তাদের সমর্থন জানিয়ে থাকেন। তারা দলীয় গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতি আস্থাশীল থাকতে পছন্দ করেন।
দলকানা সমর্থক: কিছু ভোটার রয়েছেন যা দলের মনোনীত যেকোন প্রার্থীর প্রতি অগাধ আস্থা দেখিয়ে থাকেন। পছন্দের দলের টিকিটে যে প্রার্থীই দাঁড়াক, তারা দলীয় সমর্থনের কারণে তাকে ভোট দিয়ে থাকেন। এই বিশেষ কারণে কট্টর সমর্থকরা প্রার্থীর যোগ্যতার চেয়ে দলের পরিচিতি ও ঐতিহ্যকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
মুক্তমনা ও স্বাধীনচেতা ভোটার: অল্প সংখ্যক ভোটার রয়েছেন যারা বিশেষ কোনো দলের প্রতি অন্ধ সমর্থন বা পূর্ণ আস্থা দেখান না। তাদের ভোটের সিদ্ধান্ত প্রার্থীর যোগ্যতার ওপর বেশি নির্ভর করে।
পক্ষপাতদুষ্ট ভোটার: যেসব ভোটার একটি নির্দিষ্ট দলের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ, তারা সাধারণত দলের গৌরবকে বেশি গুরুত্ব দেন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে প্রার্থীর যোগ্যতা তাদের জন্য ততটা গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে।
সবশেষ বলা চলে, মার্কিন ভোটারদের মধ্যে একটি মিশ্র মনোভাব রয়েছে যাদের সুয়িং বা দোদুল্যমান ভোটার বলা হয়ে থাকে। নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি, প্রার্থী এবং দলের ইশতিহার সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তারা যেকোন মুহূর্তে মত বদল করেন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে যেকোন প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে থাকেন।