নারীদের অগ্রগতি, শিক্ষায় অর্জন, দারিদ্র্য হ্রাসের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট। দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের পাশাপাশি একজন নারী হিসেবেও শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে পত্রিকাটি। সোমবার (৩ অক্টোবর) ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট পেটুলা ডিভোরাকের লেখা এক নিবন্ধে এই প্রশংসা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ভার্জিনিয়ার হোটেল রিৎজ-কার্লটনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে নিবন্ধটি লেখা হয়েছে।
‘দিস প্রাইম মিনিস্টার লাফড এট দ্য মিম্ শি ইন্সপাইয়ার্ড ডিসপাইট বিইং এ ওম্যান’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধটিতে তিনি শুরু করেছেন এভাবে, ‘তিনি তার ছয় বছর বয়সী মেয়েকে উঁচু করে তুলে ধরেছেন, রিটজ কার্লটন হোটেলের বলরুমে কালোরঙের স্যুট পরা পুরষদের ভিড়ে ছোট্ট মেয়েটির গোলাপি পোশাকটি চোখে পড়ছিল
‘আমি একনজর প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে চাই’ বলছিলেন আব্দুল্লাহ্ নিয়ামি। নর্দান ভার্জিনিয়ায় প্রথম শ্রেণিতে পড়া তার মেয়ে জোয়াকে তিনি গত সপ্তাহে এমন একজন নারী সরকার প্রধানকে দেখানোর জন্য নিয়ে আসেন যা আমেরিকায় এখনো বিরল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দান শেষে অন্যান্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নর্দান ভার্জিনিয়ার এই রিটজ হোটেলে অবস্থান করেন।
এখানে তিনি ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিবেক জাগ্রত করার আহ্বান জানান। ’
বিশ্বে দীর্ঘতম সময়ের নারী সরকার প্রধান, এশিয়ার চেয়ে অধিক জনবহুল একটি দেশের নেতৃত্ব দানকারী এবং জনসভায় গ্রেনেড হামলাসহ অন্তত ২০ বার হত্যা প্রচেষ্টা থেকে রক্ষা পাওয়া শেখ হাসিনা একজন দাদী ও নানী।
তাঁর ৭৬তম জন্মদিন তিনি তার ছেলে ও ১৬ বছর বয়সী নাতনীর সঙ্গে পালন করেছেন- যারা রাজধানীর বাইরের একটি শহরতলীতে বাস করেন।
লেখক বলেন, আমরা এসব জেনেছি কারণ তাঁর যাত্রার এই পর্যায়ে তাঁর বিভিন্ন অনুষ্ঠানসূচির মাঝে আমার সঙ্গে একের পর এক সাক্ষাৎকার হয়েছিল।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, একটি ভাইরাল হওয়া মিম সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, শেখ হাসিনা মৃদুস্বরে ‘নারীরা পুরুষদের চেয়ে ভালো’ বলে হেসে ওঠেন। এরপর তিনি বলতে থাকেন – তিনি একজন নারী। আর একারণেই তিনি বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও শিক্ষার সংগ্রাম, বেশিরভাগ নারীরা যে বাধাগুলোর মুখোমুখি হন এবং কীভাবে তাদের স্থবিরতা একটি জাতির অগ্রগতিকে ধীর করে দেয়, তা আরও গভীরভাবে বুঝতে পারেন। লেখক উল্লেখ করেন, হোটেল কর্মীরা অভিভূত।
লেখক বলেন, হাসিনা জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে রাজি হয়ে গেলেন। রিটজ হোটেলের লোকেরা টেবিল এবং চেয়ারগুলো তাদের পুরানো ডোমিনিয়ন রুমের পাশে ঠেলে দেয়। নিরাপত্তার ব্যবস্থা সাজানো হলো কমপক্ষে ২০০ জনকে বলরুমে জায়গা করে দিতে। নিবন্ধে বলা হয়েছে, সমর্থকদের অধিকাংশই পুরুষ। শুধু গোলাপি পোশাক এবং ম্যাচিং জুতা পরা জোয়া ছাড়া। আর মালিহা জামান (২৪) ছুটিতে। মালিহা জামান বলেন, অবশ্যই আমি এমন একজন নারীকে দেখতেই ছুটে এসেছি। কারণ তিনিই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। মালিহা দুই বছর আগে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে আসেন এখানে। শেখ হাসিনার চালু করা করা একটি শিক্ষা উদ্যোগের সুযোগে তিনি তার মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করে বর্তমানে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ভার্জিনিয়ায় বসবাস করছেন। মালিহা কৌশলীভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কোনো নারী রাষ্ট্রপতি পায়নি।
তিনি বলেন, টাইসনসের রিটজে যা তিনি দেখলেন, এ রকম দৃশ্য খুব কমই পাওয়া যাবে। পুরুষরা যখন শেখ হাসিনাকে দেখার জন্য ধাক্কাধাক্কি করছিলেন, তখন অন্য একজন নারী বলছিলেন যে, এটাই প্রধানমন্ত্রীকে করে তুলেছে বৈশিষ্টমণ্ডিত।
শাহেদা পারভীন বলেন, তিনি বয়স্ক মানুষ ও শিক্ষার কথা ভাবেন। তিনি পরিবহন, গুরুত্বপূর্ণ সেতু নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি শিশুদের সম্পর্কে চিন্তা করেন, গর্ভবতী নারীদের নিয়েও তিনি ভাবেন।