প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে দুদক।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ অভিযোগপত্র দেন। কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
অনুসন্ধানের স্বার্থে একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর তিন সদস্যের একটি টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধান শেষে গত ৫ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপর পাঁচ মাস তদন্ত শেষে মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়া হলো।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিন মো. হিলালী, চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, পরিচালক আনোয়ারা বেগম ও অপর পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান।
তাঁদের মধ্যে শেষের তিন আসামি তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগপত্রভুক্ত হন। বাকি ছয়জন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলো বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬.৮৮ ডেসিমেল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা।
আসামিরা বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। এরপর আসামিরা
এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এভাবে আসামিরা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন।
এই বেআইনি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয়ে ঘুষের আদান-প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।