দেশের বাজারে একক ডলার দাম বেঁধে দেওয়া হলেও মানছে না খোলাবাজারের বিক্রেতারা। ডলারের দামে আবারও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে খোলাবাজারে। গতকাল সরকারি ছুটির দিনেও ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়। গতকাল কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হয়েছে ১১৪ টাকা ৭০ পয়সা। যদিও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডলারের একক দর নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ডলার কেনাবেচা করছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু খোলাবাজারকে এর আওতায় আনা যাচ্ছে না। ডলারের দর স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বৈশি^ক সঙ্কটের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে। দেশে প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দেয় ডলারের দাম বৃদ্ধি। ডলারের এমন অস্থিরতার মধ্যে খোলাবাজার ও ব্যাংকগুলোতে সরেজমিন পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল। তারা যাচাই করে ফরেন এক্সচেঞ্জ ও ট্রেজারি বিভাগের নথি, ডলার সংগ্রহের অনলাইন ও নগদে কেনাবেচার তথ্য। এ ছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ নেতারা এক সভায় বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করেন।
এতে রফতানি আয়ে ডলারের দাম ৯৯ টাকা ও প্রবাসী আয়ে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ফলে ডলার সংগ্রহে গড়ে সর্বোচ্চ খরচ হয় ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা। এ ক্ষেত্রে আমদানিকারকদের কাছ থেকে প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা নিতে পারবে। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের পরেও খোলাবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এসব খুচরা বাজারে প্রতিনিয়ত বেশি দামে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। ডলারের এই মূল্য ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। পল্টনের ডলার বিক্রেতা মাহফুজুর রহমান লিটন বলেন, ‘আজকে মানি এক্সচেঞ্জগুলো ১১৪ টাকা ৭০ পয়সায় ডলার বিক্রি করছে। এ ছাড়া ডলার ক্রয় করছে ১১৪ টাকা ৫০ পয়সায়। গত কয়েক দিন ধরে এই দরেই খুচরা বাজারে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে।’
এখানকার আরেকজন বিক্রেতা জানান, সেপ্টেম্বরের শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার পল্টনের মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলার বিক্রি হয় ১১৬ টাকা ৩০ পয়সায়। সেই তুলনায় চলতি মাসে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। এদিকে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদায়ি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম ডলারের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগে ডলারের দাম স্বাভাবিক হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাজারে কোনো ডলার সাপোর্ট দেওয়া উচিত না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডলারের সঙ্কট নিরসন ও প্রবাসী আয় বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরাই বসে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে।’