সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার কিংবা সেমিনারে বাড়েনি আসন সংখ্যা।অপরদিকে প্রত্যাশিত চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বাইরে বড় একটা সংখ্যার উপস্থিতি থাকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে। যার কারণে চব্বিশ ঘণ্টা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের ভোর চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে এসে লাইনে রাখতে হয় ব্যাগ। পরে সকাল ৮টায় লাইব্রেরি খুললে ব্যাগের সিরিয়াল অনুযায়ী লাইব্রেরিতে ঢুকে আসন ধরতে হয়। আধা ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিটি আসনাই পূর্ণ হয়ে যায়। কাকডাকা ভোরে সিরিয়ালে ব্যাগ রাখতে হয়।
একটু দেরি করলেই হাতছাড়া হয়ে যায় সে আকাঙ্ক্ষিত আসনটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নেছার আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একেকটি পড়ার আসন যেন একেকটি সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। লাইব্রেরিতে একটি আসন পাওয়ার জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয় আমাদের। দিন দিন এই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করছে। আমরা চাই ২৪ ঘণ্টা লাইব্রেরি খোলা থাকুক।
লাইব্রেরিতে পড়তে আসা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই হলেন বিসিএস এবং অন্যান্য সরকারি চাকরি প্রার্থী। যাদের কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নের সুযোগ পান না। এ বিষয়ে জিঙ্গেস করা হলে চাকরি প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, আসন সংকটতো হবেই, আমাদের দেশের এই শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে আজকে ভোরে উঠেই কাঁধে সাধারণ জ্ঞানের বই নিয়ে দৌড়াতে হচ্ছে লাইব্রেরিতে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে আর কোনো উপায় থাকছে না। লাইব্রেরির সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সরকারি চাকরির নিয়োগ ব্যবস্থারও পরিবর্তন আনতে হবে বলে সামগ্রিকভাবে। আপাতত চাইলে কর্তৃপক্ষ লাইব্রেরির সময় বাড়াতে পারে।
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শিডিউল ভিন্ন সময় থাকায় সকাল গিয়েই আসন ধরতে পারেন না অনেকে। পরবর্তীতে ক্লাস শেষে যখন গ্রন্থাগারে যান তখন আর আসন পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রী সানজিদা খাতুন বলেন, যাদের মাস্টার্স শেষ হয়েছে তাদের অনেকে বিসিএসের বই পড়েন। আমরা ক্লাস শেষ করে যখন টিচারদের দেওয়া রেফারেন্স বই খুঁজতে যাই তখন বই নিয়ে বসার সুযোগ পাই না। অনেক সময় দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। আমরা চাই গ্রন্থাগার সব সময় খোলা থাকুক। এতে একটু চাপ কমবে।
অপরদিকে গত সিনেট অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ল্যাব ও লাইব্রেরি চব্বিশ ঘণ্টা খোলা রাখার ব্যাপারে প্রস্তাব দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক নাসির উদ্দীন মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি।