জাতিসংঘ ৭৬ জনের গুমের যে তালিকা করেছে তাদের মধ্যে ২৮ জনই হত্যা, নাশকতা এবং মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত। সরকার বলছে এরই মধ্যে ফিরেছে ১০ জন। তালিকা করার আগে জাতিসংঘের আরও বেশি তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই করে নেয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, তখন সেদেশের মানবাধিকার নিয়েই প্রশ্ন আছে।
গুম নিয়ে জাতিসংঘের তথ্য সরবরাহের নেপথ্যে বাংলাদেশের কয়েকটি এনজিওর ভূমিকা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকার রিপোর্টে ১৯৯৬ সালে ১২ জুন কল্পনা চাকমা, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বরিশালের ছাত্রলীগ নেতা শফিকউল্লাহ মোনায়েম এবং ২০০৮ সালের ২৫ মে হাসান খান নিখোঁজের ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এ তিনটি ঘটনার কোনোটিই আওয়ামী লীগের আমলের নয়, তারপরও দায় দেয়া হচ্ছে বর্তমান সরকারকে।
জাতিসংঘ যে ৭৬ জনকে জোরপূর্বক গুমের অভিযোগ করছে এর মধ্যে ২৮ জনই হত্যা, নাশকতা এবং মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তালিকার মধ্যে বিভিন্ন অসঙ্গতি রয়েছে। তালিকা দেখেই মনে হচ্ছে, যারা এটি তৈরি করেছেন, তাদের হয়তো কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল।
গুম নিয়ে জাতিসংঘের তথ্য উপাত্ত যাচাই না করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন, তাদের উচিত তালিকাটা যেন নিরপেক্ষ হয়, সেটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা। তা না করা গেলে অনেক নিরপরাধ মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে। আবার অপরাধীও যেন পার না পেয়ে যায়, সেটি দেখাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জাতিসংঘেরও উচিত ছিল তালিকার তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা।
জাতিসংঘের গুমের তালিকায় এমন নামও আছে যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত টক শোতে অংশ নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, গুমের তালিকায় ভারতের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নাম দিয়েই বিতর্কের জন্ম দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের ওই রিপোর্ট।