টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। ক্রিদেশীয় সিরিজ শেষে সাকিব আল হাসান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দলে আসতে পারে দুটি পরিবর্তন। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বাদ পড়েছেন। দলে ঢোকেন সৌম্য সরকার ও শরিফুল ইসলাম।
১৫ সদস্যের দলে নতুনের সংখ্যাই বেশি। এই নতুনের কেতন সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় কতটা উড়বে, তা নিয়ে ছক কষছে সবাই। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ফেভারিট নয়। না পারফরম্যান্স, না পরিসংখ্যান— কোনোটাই পক্ষে নেই। আছে কিছু অভিজ্ঞতা। এক সাকিব দলের বাকি ১৪ জনের চেয়ে এগিয়ে। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, লিটন দাসরা পোঁড় খাওয়া। তবু ক্রিকেটের ছোট সংস্করণে খেই হারায় দল।
প্রস্তুতি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ শেষে সাকিব বলেছিলেন, বোলিং যথেষ্ট ভালো হলেও, ব্যাটিংয়ে নজর দিতে হবে আমাদের। পরের দুই ম্যাচে উল্টো চিত্র। ব্যাটিং ভালো, বোলিং তথৈবচ। সাকিবের টানা দুই ফিফটি, শেষ ম্যাচে লিটনের সঙ্গে মিলিয়ে প্রস্তুতি একেবারে খারাপ না।প্রথম তিন ম্যাচে মাঝের ওভারগুলোতে খেই হারাতো বাংলাদেশ। উইকেট যেতো নিয়মিত বিরতিতে। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিব-লিটন আগলে রাখেন উইকেট, সমান্তরালে রানের চাকা ঠিক রাখেন। একটু একটু করে ভুলের জায়গাগুলোতে নজর দিচ্ছে দল, এটি ভালো লক্ষণ।বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরণ শ্রীরাম সাকিবের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন। ওপেনিংয়ের সমস্যা কাটাতে লিটন-সৌম্য জুটি আদর্শ হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ও ২০১৫ সালে জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে সৌম্যর।
লিটন দাস চলতি বছর ক্রিকেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বিশুদ্ধ ক্রিকেট খেলেন তিনি। আগ্রাসন আর বিচক্ষণতার মিশেলে ভালো কিছুর আশা করা যায় লিটনের কাছ থেকে। টপ অর্ডারে এরপর সাকিবের নাম। সাকিব আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আমাদের শুরুর দিকের তিন চারজন ব্যাটসম্যান অন্তত ১৫/১৬ ওভার পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারলে খেলার গতি বাড়ে। এতে মিড অর্ডারে আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সুযোগ পাবেন ডরহীন ইনিংস খেলার। টি-টোয়েন্টির চাহিদাই তো হাত খুলে খেলার!
বোলিংয়ে চোখ বোলালে দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়ার বৈচিত্র্যময় ও গতিশীল উইকেটে মুস্তাফিজের দারুণ সুযোগ নিজেকে আবার মেলে ধরার। গতিশীল তাসকিনের সাম্প্রতিক অবস্থা বিবেচনায় বাড়তি প্রত্যাশা রাখাই যায়। ত্রিদেশীয় সিরিজে হাসান মাহমুদ ভালো বোলিং করেছেন। অনভিজ্ঞ ইবাদত, শরিফুলরা সামর্থ্যের সবটুকু দিলে প্রতিপক্ষকে অন্তত ভীতসন্ত্রস্ত করতে পারবে। ক্রিকেটে শরীরের ভাষার গুরুত্ব ভীষণ! সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদের স্পিন, সাকিব তো আছেনই সবকিছু সামাল দিতে।২৪ অক্টোবর হোবার্টে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হবে বাংলাদেশের। তার আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।