নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া থাকলেও তাঁরা আসেন না, স্বাস্থ্যসেবা চলে পিয়ন দিয়ে। নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলার কথা থাকলেও খোলা হয় ১০টার দিকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত শনিবার সময় সকাল সোয়া ৯টা। ভুলতা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝোলানো।
সাড়ে ৯টার দিকে একটি শিশু তালা খোলে। ভেতরে প্রবেশ করেই দেখা গেল কেন্দ্রের সব কক্ষে তালা দেওয়া। ১০টার দিকে এই প্রতিবেদককে দেখে অপ্রস্তুতভাবেই আয়েশা সিদ্দিকা তাঁর কক্ষটি খুলে বসেন। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কারো উপস্থিতি দেখা গেল না। ততক্ষণে বেশ কয়েকজন রোগী এসে ফিরেও গেছেন। সোয়া ১১টার দিকে আসেন পিয়ন ছলিম উদ্দিন। তখনো চিকিৎসা কর্মকর্তা, উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা, ফার্মাসিস্টসহ অন্যান্য কক্ষে তালা লাগানো দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন জানান, কেন্দ্রটি প্রতিদিন বন্ধের মতোই থাকে। চিকিৎসক বসেন না। পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা আয়েশা সিদ্দিকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই থাকেন, তাই মাঝেমধ্যে তাঁকে পাওয়া যায়। কথা হয় এখানে আসা রোগী লিমা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষেরা অসুখ হলে এখানেই আসি চিকিৎসা নিতে। ডাক্তার না পেয়ে ছলিম চাচার (পিয়ন) কাছ থেকে ওষুধ নিই। ’ চিকিৎসা নিতে আসা আরেকজন, গার্মেন্টকর্মী রহমান মিয়াও একই কথা বলেন।
জানা গেছে, ভুলতা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন চিকিৎসা কর্মকর্তা হেলেনা বেগম, উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা সজিব, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা আয়েশা সিদ্দিকা, ফার্মাসিস্ট বাদল মিয়া, পরিবার কল্যাণ সহকারী শারমিন আক্তার, হাসনা হেনা, ফরজুতুন নেছা, মাসুদা বেগম, স্বাস্থ্য সহকারী আতিকুর রহমান, নাদিম মিয়া, রফেজা আক্তার ও তাহমিনা আক্তার। আর পিয়ন হিসেবে কাজ করেন ছলিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।
এখানে আসা একাধিক রোগীর অভিযোগ, স্বাস্থ্য সহকারীরা স্থানীয় লোক হওয়ায় কেউ এসবের প্রতিবাদ করারও সাহস পায় না। শুধু পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা আয়েশা সিদ্দিকা সপ্তাহে তিন দিন অফিস করেন। আর অন্যরা মাঝে মাঝে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান। এ বিষয়ে আয়েশা সিদ্দিকা দাবি করেন, তিনি সপ্তাহে তিন দিন স্বাস্থ্যসেবা দিতে মাঠে থাকেন।
উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা সজিবের দাবি, তিনি এখানে কাগজে-কলমে কর্মরত থাকলেও তাঁকে বসানো হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।