সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন

তথ্য দিলে লাখ টাকা পুরস্কার

প্রতিনিধির / ১৮৩ বার
আপডেট : রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২
তথ্য দিলে লাখ টাকা পুরস্কার
তথ্য দিলে লাখ টাকা পুরস্কার

নতুন জঙ্গি দলের ‘পাহাড়ি যোগের’ তথ্য সামনে আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত অভিযান শুরু হয়েছে; যেটির অংশ হিসেবে দুর্গম এলাকায় করা হচ্ছে প্রচারপত্র বিলি, চলছে মাইকিং। জঙ্গিদের অবস্থানের তথ্য প্রদানকারীকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ারও ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে প্রচারপত্রে (লিফলেট)। পাশাপাশি জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বানও জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পাহাড়ে অভিযান চলার কথা জানিয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন পাহাড়ে কারও বাড়িতে বা দুর্গম এলাকার অন্যত্র জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকলে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতেই লিফলেট বিলি করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, অনেক দুর্গম এলাকায় অভিযান চলছে। তবে বলার মত কোনো ‘ডেভেলপমেন্ট’ আসেনি।

নতুন জঙ্গি সংগঠনের ১২ জনকে আগে গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা জেনেছি যে জঙ্গিরা পাহাড়ের একটি সংগঠনের ছত্রছায়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন আমরা তাদের জীবনযাত্রায় কোন ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না।

“তবে আমরা যতদূর জেনেছি তাদের মধ্যেই আমাদের সন্দেহভাজন জঙ্গিরা আত্মগোপন করে রয়েছে। তাই আমরা সেখানে লিফলেট বিতরণ করেছি, যদি কারও বাসায় বা কোথাও জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকে তাহলে যেন তারা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে। অনেক সময় আছে না… অনেকেই হয়ত জানেন।”

প্রচারপত্র বিলি ও মাইকিং করার কারণ তুলে ধরে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক গহীনে ছোট ছোট গ্রামে মানুষের বাস আছে। তো সেইসব জায়গায় আমরা লিফলেটগুলো পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।”

পাঁচজন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গত ৬ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানায়, এরা সবাই নবগঠিত একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।

‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামের দলটি মূলত হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম থেকে দলছুট কিছু লোক মিলে গঠন করেছে।

এর চার দিনের মাথায় গত ১০ অক্টোবর একই সংগঠনের আরও সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের বিশেষায়িত এ ইউনিট সংবাদ সম্মেলনে জানায়, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি অংশ পৃষ্ঠপোষকতা করছে। সেখানে তাদের প্রশিক্ষণ চলছে।

ওই দিন র‌্যাবের মুখপাত্র আল মঈন জানান, দলটির বিষয়ে সরকারি অন্য সংস্থাগুলোকেও জানানো হয়েছে।“তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়েছি। বিভিন্ন বাহিনী আছে পার্বত্য চট্টগ্রামে, তাদেরকেও এই তথ্য দিয়েছি। বর্তমানে সমন্বিতভাবে এই অভিযান চলছে।”

স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে পাহাড়ি গোষ্ঠীর কথা বলছে সেটিরও আত্মপ্রকাশের বেশিদিন হয়নি। তাদের কেউ কেউ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি নামে নতুন পাহাড়ি সংগঠনটির দিকে আঙুল তুলেছে।এ সংগঠন গত জুনে ফেইসবুক পেইজে একটি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আলোচনায় আসে। তবে এ দলের কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভবপর হয়নি।

জঙ্গিদের ধরতে পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মধ্যে ‘বিশেষ ঘোষণা’ শিরোনামে বিলি করা এ প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, “আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী আপনাদের এলাকায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। এই অভিযান কোনভাবেই কোনো সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। বরং এই অভিযান সমতল থেকে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া জঙ্গিদের বিরুদ্ধে।

“এইসব জঙ্গি কাদের আশ্রয় এবং প্রশ্রয়ে আছে সেই সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিতভাবে অবগত আছে। তারা যদি শান্তিপূর্ণভাবে জঙ্গিদের হস্তান্তর না করে তাহলে আশ্রয় প্রদানকারীদের কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।”এতে জঙ্গিদের ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

প্রচারপত্রটিতে বলা হয়, “প্রিয় এলাকাবাসী ভাই-বোনদের বলা হচ্ছে যে, যে যে ব্যক্তি সমতল থেকে আসা জঙ্গিদের অবস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারবে তাদেরকে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হবে। তথ্যদাতাদের নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।“

একই সঙ্গে প্রচারপত্রে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকদের তাদের হেফাজতে থাকা জঙ্গিদের শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, “তা না হলে আশ্রয় প্রদানকারীদের কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ