সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালালের সুপারিশ ছাড়া কোনো কাজ করা যায় না। নবায়ন ও নতুন পাসপোর্টের জন্য নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। নবায়নে তথ্য আপডেট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের আলোকে সংশোধন করতে গিয়ে চরম হয়রানি পোহাতে হচ্ছে।
গত রবিবার পাসপোর্ট অফিসে গেলে আবেদনকারীরা জানান, অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করে টাকা জমা দিতে পাসপোর্ট অফিসে আসার পর হয়রানি শুরু হয়।
দালাল না ধরে আবেদনপত্র জমা দিতে এলে সময় ক্ষেপণ, আঙুলের ছাপ না নেওয়া, কাগজের ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরাসহ নানাভাবে হয়রানি করা হয়। যাঁরা দালাল ধরে পাসপোর্ট জমা দেন, তাঁদের আবেদনে একটি চিহ্ন দেওয়া থাকে। তাঁরা আবেদন জমা দিলে সহজে আঙুলের ছাপ দিতে পারেন। এই হয়রানির কারণে বাধ্য হয়ে দালাল ধরে অতিরিক্ত টাকা গুনে পাসপোর্ট করাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
তবে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন পাসপোর্ট নবায়নকারীরা। তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে, বয়স সংশোধন করতে হলে, মা-বাবার নাম সংশোধন করতে হলে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা দিতে হয়।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের আগে মো. আছে। কিন্তু আমার পাসপোর্টে বাবার নামে নেই। এ ছাড়া নামে একটি দুটি বর্ণ অসাবধানতাবশত হওয়ায় সেগুলো সংশোধন করা জরুরি ছিল। এ জন্য আমাকে ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছে। ’
শান্তিগঞ্জ উপজেলার আক্তারপাড়ার বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমার তালতো ভাইয়ের (ভাই/বোনের শ্বশুরের সন্তান) পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে এসে অফিসে জমা দেওয়ার পর ভুল ধরে আমাদের বিদায় করা হয়। পরে দালাল ধরে আবেদন করার পর সহজে অঙুলের ছাপ দিতে পেরেছি। এ কারণে অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা দিতে হয়েছে। তবে জরুরি ফি দেওয়ার পরও নির্ধারিত দিনে এসে পাসপোর্ট পাইনি। তিন দিন এসে ফিরে গেছি। এতে সময় ও অর্থের অপচয় হয়েছে। ’
দিরাই উপজেলার কামদরগাঁওয়ের যুবক রাসেল মিয়া বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে দালাল ধরে পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গার দিয়েছিলাম। সরকারি ফির সঙ্গে আরো অতিরিক্ত তিন হাজার টাকাও দিয়েছিলাম। এর পরও সময়মতো আমাকে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়নি। ’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা যাবে কি না, জানাব। ’
বিভাগীয় আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘উপপরিচালক মিডিয়ায় কথা বলতে পারবেন কি না, এটা তাঁর বিষয়। এ বিষয়ে আমি তাঁকে কিছু বলতে পারব না।
এই কলঙ্কমুক্ত করতে পারবে কি আমাদের দেশটা থেকে। বাইরের দেশের 24 ঘন্টায় পাসপোর্ট দেয়ার আমাদের দেশে অনেক সময় নেই এবং অনেক টাকা দিতে হয়।
ধন্যবাদ স্যার আমাদের সাথে থেকে আপনারা মূল্যবান মন্তব্যে জন্য।