দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় ক্যানসার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিমাণ অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে ক্যানসার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২২৮ জন। অথচ আরো পাঁচ হাজার ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দরকার।=শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ সোসাইটি অব রেডিয়েশন অনকোলজিস্টস (বিএসআরও) আয়োজিত বাংলাদেশের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ নবীন-প্রবীণ সম্মেলন-২০২২ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ক্যানসার চিকিৎসায় অসামান্য অবদান রাখায় ছয়জনকে মরণোত্তর ও আট ক্যানসার বিশেষজ্ঞকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউর ক্যানসার বিষয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্য যদি আমাকে সহযোগিতা করেন তবে আমার ক্যাম্পাসেই আগামী সেশনে আসন সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জনে উন্নীত করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্যানসার চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বিভাগীয় শহরে ক্যানসার ইনস্টিটিউট করার সিদ্ধান্তের ফলে আমরা আশান্বিত হয়েছি। এখানেও অনেক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ কোটি লোকের মধ্যে ১২ লাখ মানুষ মারা যায়। সে হিসাবে বাংলাদেশের ৬ লাখ মানুষ মারা যাওয়ার কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কঠোর মনিটরিং, দিকনির্দেশনা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে মাত্র ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছে। ডা. শারফুদ্দিন আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট অনলাইনে দেওয়া চালু করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট অনলাইনে চালু করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস (বিসিপিএস) সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, একসময় বাংলাদেশের হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীরা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতেন। বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের তালিকায় শীর্ষে ছিল হৃদরোগে আক্রান্তরা। দেশে এখন হৃদরোগ চিকিৎসার অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে বিদেশ যাওয়া রোগীর তালিকায় হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা তৃতীয়।
তবে ক্যানসার রোগে আক্রান্ত রোগীরা এ তালিকায় প্রথম। তাই এ বিষয়ে চিকিৎসক বাড়ানো সময়ের দাবি। ক্যানসারসহ সব চিকিৎসাই সময় নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী করা উচিত বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সোসাইটির বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক অর্জন সম্পর্কে প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ডা. সাদিয়া শারমিন।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরওর সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী মুশতাক হোসেন। বিএসআরওর সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম নিজামুল হক, অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লা, সদস্য অধ্যাপক সারোয়ার আলম, অধ্যাপক ডা. আবদুল বারী, প্রকাশনা সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ডা. মামুন উর রশিদ ও দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশ নেন।