মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারি বলেন, ‘দুপুর ২টা থেকে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। সাগরে জোয়ার থাকায় এবং ড্রেজার এখনো পানির নিচে থাকায় বিকেল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও লাশগুলো উদ্ধার সম্ভব হয়নি। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সাগরে থাকা ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ আট শ্রমিকের লাশ ২০ ঘণ্টা পরও উদ্ধার করা যায়নি।মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও মেলেনি তাদের সন্ধান। এর আগে দুপুর ২টা থেকে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।এদিকে স্বজনের লাশের জন্য সাগরপাড়ে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজদের পরিবার।
নিখোঁজ শাহিন মোল্লা ও ইমাম মোল্লার ভাই এনায়েত মোল্লা বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ৮টা থেকে আমার আপন দু’ভাই ও চাচাত ছয় ভাইসহ মোট আটজন বালু উত্তোলনের ড্রেজারে সাগরে আটকে পড়ে। রাতে বিষয়টি শোনার পর তাৎক্ষণিক রওনা দিয়ে সকাল ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে তখনো কোনো উদ্ধার তৎপরতা না দেখে আমি হতাশ হই। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুপুর ২টার দিকে।’তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনার পর ড্রেজার সৈকত-২-এর মালিক মোহাম্মদ গাফফারকে রাতে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হাসপাতালে। তুমি যাও, আমি সকালে আসবো। সকালে এসে তাকে একাধিক বার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। এর পর তিনি তার ম্যানেজারকে বলেন, যে করে হোক লাশগুলো ড্রেজার থেকে বের করে পেট কেটে নদীতে বাসিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করো।’
উল্লেখ্য, উপজেলার ১৬ নম্বর সাহেরখালি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বসুন্ধরা এলাকায় সাগরের মাঝে বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিনটি রাখা ছিল। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগরে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়ায় বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন সৈকত-২ পানিতে ভেসে গিয়ে ডুবে যায়।ড্রেজারে অবস্থানরত শ্রমিকরা হলেন- শাহীন মোল্লা (৩৮), ড্রেজার চালক ইমাম মোল্লা (৩২), মাহমুদ মোল্লা (৩২), আলামিন (২১), তারেক, আবুল বশর (৪৫) ও আরো দু’জন নিখোঁজ হন। সকল শ্রমিকের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি মোল্লাবাড়ি থানায়।
ড্রেজার থেকে বেঁচে ফেরা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ড্রেজারে আমিসহ নয়জন শ্রমিক ছিলাম। দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যায় অনুমান ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে চলে আসি। বাকিরা ড্রেজারেই অবস্থান করছিলেন। ড্রেজারটির মালিক সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে নিয়োগ দিয়েছে বেপজা।’উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবরির একটি দল উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। সাগরে জোয়ার ভাটা থাকায় উদ্ধার অভিযান সহজ হবে।’