সব দেশেই কিছু মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য থাকে না। অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোতে এমন মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। বাংলাদেশের প্রায় ১২ কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। বাংলাদেশের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৭ কোটি।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বিবেচনায় আনলে বাংলাদেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার না কেনার তালিকায় বাংলাদেশের ওপরে আছে ভারত, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও চীন। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘অ্যাটলাস অব সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস ২০২৩’ প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না।
দেশটির ৯৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষ মানসম্পন্ন খাবার পায় না। ভারতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠীর এই দশা। দ্বিতীয় স্থানে আছে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া। দেশটির প্রায় ১৯ কোটি ৮০ লাখ মানুষ পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার পায় না।তৃতীয় স্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় ১৮ কোটি ৯০ লাখ, চতুর্থ স্থানে থাকা পাকিস্তানে ১৮ কোটি ৪০ লাখ এবং পঞ্চম স্থানে চীনে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই।
এ ছাড়া ইথিওপিয়ায় প্রায় ১০ কোটি, কঙ্গোতে আট কোটি, ফিলিপাইনে সাড়ে সাত কোটি ও মিসরে সাত কোটি ৪০ লাখ মানুষের এমন দশা। এর বাইরে পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে আড়াই কোটি মানুষ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় এক কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পায় না। উন্নত ধনী দেশেও এ সমস্যা আছে। তবে সেখানে এমন মানুষের সংখ্যা কম।অন্যতম ক্ষমতাধর ও ধনী দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও ৪৯ লাখ মানুষ মানসম্পন্ন খাবার কিনতে পারে না। আর যুক্তরাজ্যে এ সংখ্যা তিন লাখ। এ ছাড়া জার্মানির মতো ধনী দেশে এমন মানুষের সংখ্যা দুই লাখ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বিশ্বের অন্যতম দেশ হলো জাপান। জাপানের ৩১ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রায় ৮২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে। প্রতি ১০ জনে একজন পুষ্টিহীনতায় আছে। এ ছাড়া সারা বিশ্বের ৩১০ কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সক্ষমতা নেই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার চ্যালেঞ্জ আরো বেড়েছে।