বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন বলেন, ভিয়েতনামের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ। কভিড মহামারীর সময়ও দুদেশের ব্যবসা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সামনের দিনগুলোয় এটা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন, প্রতিনিধি দলের আদান-প্রদান ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার যোগাযোগ বৃদ্ধি প্রয়োজন।গতকাল ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য আলোচনা সভা’ এবং বিটুবি ম্যাচ-মেকিং সেশনে বক্তারা এ কথা বলেন।ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডু হুয়াক হাংয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফররত ৩১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ আলোচনা ও বিটুবি সেশনে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সেশনে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০২১ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্য ছিল ৭৩৯ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন, বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের আদান-প্রদান এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। বাংলাদেশের কৃষি, জাহাজ নির্মাণ, ইলেকট্রনিকস, টেক্সটাইল, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং হালকা-প্রকৌশল প্রভৃতি খাতে ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের একক ও যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ডিসিসিআই আয়োজিত বিটুবি সেশন দুই দেশের বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার যোগাযোগ আরো সম্প্রসারণ হবে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন ফাম ভিয়েত চিয়েন। তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের ভিয়েতনামে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রতিনিধি দলের দলনেতা এবং ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডু হুয়াক হাং বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের মধ্যকার যোগাযোগ এখনো আশানুরূপ পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। এ অবস্থার উন্নয়নে তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রতিনিধি দল পাঠানোর ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, ঢাকা ও হ্যানয়ের মধ্যকার সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু করা সম্ভব হলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে। ভিয়েতনাম এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ১৫টি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা ভিয়েতনামে বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য স্বল্প শুল্ক সুবিধা ভোগ করে রফতানি করতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এসএম রহমান। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আরমান হক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়া ভিয়েতনামের ৩১টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সঙ্গে ঢাকা চেম্বারের সদস্যভুক্ত প্রায় ১০০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বিটুবি সেশনে যোগদান করেন।