বাগেরহাট ২৫০ শয্যা রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও ) মো. জব্বার ফারুকী বলেন, বর্তমানে স্থানীয় ডেঙ্গু রোগির সংখ্য বাড়ছে । জেলা হাসপাতালে র্বতমানে ৬ জন রোগি ভর্তি রয়েছে । তাদের নিয়মিত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বাগেরহাটে দিন দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় নতুন করে আরও ৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বাগেরহাট জেলা হাপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে অন্তত ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এছাড়া গেল এক সপ্তাহে ৪৪ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সব মিলে এখন পর্যন্ত জেলায় ৬৮টি জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। ক্রমন্বয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে সাধারণ মানুষকে ঘরবাড়ি ও আশপাশ এলাকা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের তথ্য মতে, বাগেরহাট ২৫০ শয্যা রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এদেরমধ্যে ব্যবসায়ী, গৃহিণী, মাইক্রোবাসচালক সহ নানা পেশার মানুষ রয়েছে।
তবে হাসপাতালে থেকে অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা আগের চেয়ে অনেকটা ভাল। আক্রান্তদের মধ্যে অনেকে ঢাকা থেকে এসেছেন। কেউ কেউ আবা স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। ঢাকায় মাইক্রো চালাতেন সদর উপজেলার কাশেমপুর মকবুল শেখ। সপ্তাহ খানেক আগে ঢাকায় বসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। জ্বর ভাল না হওয়ায় বাগেরহাটে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে জ্বর, গা ব্যাথা ও বমি হয়। ফার্মেসী থেকে ঔষধ খেলেও কমেনি। সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে। তাই বাড়িতে এসে হাসপাতালে ভর্তি হই। এখন কিছুটা ভাল।
জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ বাগেরহাট সদর উপজেলার রনবিজয়পুর গ্রামের মাহমুদা খানম বলেন, কোথাও যাইনি। তারপরও কিভাবে আক্রান্ত হলাম বুঝতেছিনা। তিন ধরে প্রচন্ড জ্বর, গা ব্যাথা ও বমি রয়েছে। এখন একটু ভাল, আশাকরি ভাল হয়ে যাব।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল ব্যক্তিগত সতর্কতা এবং এডিস মশা প্রতিরোধ। এডিস মশা সাধারণত সূর্যোদয়ের আধাঘণ্টার মধ্যে এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের আধাঘণ্টা আগে কামড়াতে বেশি পছন্দ করে। এসময়ে মশার কামড় থেকে সাবধান থাকতে হবে। ঘুমানোর আগে মশারি ব্যবহার করতে হবে।
সেই সাথে এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি রোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থান যেমন- ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, ডাবের পরিত্যক্ত খোসা, কনটেইনার, ব্যাটারির শেল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, বাথরুমের কমোড, ঘরের অ্যাকুরিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচে জমে থাকা পানি তিন থেকে পাঁচ দিন পরপর ফেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রচুর পানি খেতে হবে। সেই সাথে ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাওয়ার স্যালাইনও উপকারী বলে জানান এই চিকিৎসক।