মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১১ অপরাহ্ন

বিপর্যস্ত বিসিএস উত্তীর্ণ ৮ হাজার চাকরিপ্রত্যাশী

প্রতিনিধির / ১৬৩ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২২
বিপর্যস্ত বিসিএস উত্তীর্ণ ৮ হাজার চাকরিপ্রত্যাশী
বিপর্যস্ত বিসিএস উত্তীর্ণ ৮ হাজার চাকরিপ্রত্যাশী

গত কয়েকটি বিসিএসে মেধারভিত্তিতে ক্যাডার পদে নিয়োগের পর উত্তীর্ণ বাকি প্রার্থীদের নন-ক্যাডার হিসেবে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শূন্য পদের সংখ্যা কত, তা পিএসসিতে পাঠানোর অনুরোধ করা হতো।

সেখান থেকে পাঠানো পদের চাহিদা অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হতো। নতুন আরেকটি বিসিএসের ফল প্রকাশের আগপর্যন্ত শূন্য পদের চাহিদা এলে পিএসসি অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্যদের নিয়োগের সুপারিশ করত। সর্বশেষ গত ৩৮তম বিসিএস থেকে প্রায় ৩ হাজার ৩০২ জন চাকরিপ্রার্থীকে বর্তমান কমিশনই এই নিয়মে নিয়োগের সুপারিশ করে।

গত ৩০ মার্চ ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ করে পিএসসি। বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডার বঞ্চিত এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ১৬৬ জন।

ইতিমধ্যে নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদনও গ্রহণ করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

আগের নিয়মানুযায়ী ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার পদপ্রত্যাশী ৮ হাজার ১৬৬ জন একত্রিত হয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের শূন্য পদের জন্য ছুটাছুটি শুরু করেন। অনেক মন্ত্রণালয় থেকে শূন্য পদ পিএসসিতে পাঠাতে সক্ষম হন তারা।

তখন পর্যন্ত পিএসসিতে নবম, দশম ও এগারোতম গ্রেডে নিয়োগের জন্য মোট ১ হাজার ২০৭টি শূন্য পদের তালিকা পড়েছিল। নতুন নিয়মের কারণে যা এখন অন্য বিসিএসে সংরক্ষিত থাকবে।

নিয়মের বেড়াজালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বিসিএস উত্তীর্ণ ৮ হাজারের অধিক চাকরিপ্রত্যাশী। বিসিএস নন-ক্যাডার নিয়োগে নতুন নিয়ম চালুর পর থেকে হতাশ পরীক্ষার্থীরা।

করোনা মহামারির কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডার বঞ্চিত এসব চাকরিপ্রত্যাশীরা। বিভিন্ন মহলে তদবির করেও কোনো সুরাহা না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন,সর্বশেষ চার বিসিএসের কোনটিতে কত নন-ক্যাডার পদ বরাদ্দ থাকবে, তা আগেই নির্দিষ্ট করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিধি অনুযায়ী পিএসসি এটি করেছে। আগে বিধি অনুসরণ করা হয়নি। বিধির কারণেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। একটি বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে বেশি প্রার্থী নিয়োগ পেলেন, আরেকটিতে কম-এমন ভারসাম্যহীনতা দূর করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে ৪০তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ পরীক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

এমতাবস্থায় গত ২৩ আগস্ট পিএসসি থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের আগে যত শূন্য পদই আসুক, তা একটি বিসিএসে নিয়োগ দিয়ে শেষ করা যাবে না। কোন শূন্য পদ কোন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় এসেছে, তা বিবেচনায় আনতে হবে। এখন থেকে নতুন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাডার পদের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পদের সংখ্যাও উল্লেখ থাকবে। চলমান ৪০, ৪১, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ক্ষেত্রে কোন বিসিএসের সময় কোন শূন্য পদের চাহিদা এসেছে, তা পর্যালোচনা করে মেধার ভিত্তিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।

৪০তমের পদ গেছে অন্য বিসিএসে : ৪০তম বিসিএসে নন-ক্যাডার নিয়োগের জন্য যদি বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী বিভাজন করা হয়, তাহলে উত্তীর্ণ ৮ হাজার ১৬৬ জন মেধাবী চাকরিপ্রার্থীর অধিকাংশ সুপারিশ বঞ্চিত হবেন।

কারণ, ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। উক্ত তারিখ পর্যন্ত যত শূন্য পদ ছিল তার প্রায় সব পদেই ৩৭তম বিসিএস ও ৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডারদের সুপারিশ করা হয়েছে। এমনকি ৪০তম বিসিএস-এর চূড়ান্ত রেজাল্ট প্রকাশের আগের দিন অর্থাত্ ২৯ মার্চ তারিখেও ৩৮তম বিসিএসের প্রার্থীদের ৩৩৭টি পদে সুপারিশ করা হয়েছে।

এখন সেই হিসেবে উক্ত তারিখ পর্যন্ত শূন্য পদে সুপারিশ করতে চাইলে ৪০তম নন-ক্যাডার পদপ্রত্যাশীদের জন্য শূন্য পদ নেই বললেই চলে।

নতুন নিয়ম বাতিলে আন্দোলন : নন-ক্যাডার নিয়োগে পিএসসির নতুন নিয়ম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশীরা। নতুন নিয়ম বাতিল করে পূর্বের নিয়ম অনুসরণের দাবি জানিয়েছে তারা।

দাবির পক্ষে গত ৬ অক্টোবর পিএসসির সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন নিয়ম বাতিলে পিএসসিকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এছাড়াও গত ১৬ অক্টোবর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী রবিবার পরীক্ষার্থীদের আলটিমেটাম শেষ হবে। এর মধ্যে দাবি না মানলে পরবর্তী সময়ে আরো কঠিন আন্দোলনে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ