ভারতে একটি ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে পূজা করেছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দশেরার মিছিলের অংশ ছিল এমন একটি জনতা গত বুধবার (৫ অক্টোবর) রাতে কর্ণাটকের বিদারে কয়েকশত বছরের পুরোনো ওই মাদ্রাসায় প্রবেশ করে, স্লোগান দেয় এবং ভবনের এক কোণে পূজা করে।
এ ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে এবং চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবশ্য শুক্রবারের (৭ অক্টোবর) মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার না করা হলে বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছিল মুসলিম সংগঠনগুলো। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের বিদারে অবস্থিত মাহমুদ গাওয়ান মাদ্রাসায় গত বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। ১৪৬০-এর দশকে নির্মিত এই মাদ্রাসাটি ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের মনোনীত একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। অর্থাৎ এটি ৫৫০ বছরেরও বেশি পুরোনো মাদ্রাসা। এছাড়া এই মাদ্রাসাটি ভারতের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিসৌধের তালিকায়ও রয়েছে।
পুলিশ জানায়, উত্তেজিত জনতা মাদ্রাসার তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে প্রবেশের পর তারা মাদ্রাসার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘হিন্দু ধর্মের জয়’ স্লোগান দেয়। এরপর তারা পূজা করার জন্য সেখানকার একটি ভবনের কোণায় যায়।
অনলাইনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাদ্রাসার ভেতরে সিঁড়িতে বিশাল ভিড়, তারা সেখানে ভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে।
এর আগে স্থানীয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনও (তখন পর্যন্ত) কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অবশ্য পরে চারজনকে আটকের কথা জানায় পুলিশ।
এদিকে বিদারের বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে শুত্রবার জুমার নামাজের পর ব্যাপক আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনার জন্য রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে অভিযুক্ত করেছেন এবং এই ধরনের ঘটনাকে ‘মুসলিমদের হেয় করার’ জন্য প্রচার করার অভিযোগ তুলেছেন।
এনডিটিভি বলছে, সমালোচকরা বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যের কিছু অংশকে সাম্প্রদায়িক পরীক্ষার জন্য রণক্ষেত্রে পরিণত করার অভিযোগ করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্কের পর এই অভিযোগগুলো উঠতে শুরু করে এবং হিন্দু গোষ্ঠীগুলো মন্দিরের মেলা থেকে মুসলিম ব্যবসায়ীদের নিষিদ্ধ করার পর এই অভিযোগ আরও জোরদার হয়।