জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নামে ভুয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি খুলে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৫ রিং লিডারসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।র্যাব জানায়, চাকরিপ্রত্যাশী শত শত তরুণ-তরুণী ও ছাত্র-ছাত্রী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিজ্ঞাপন সরল মনে বিশ্বাস করে চক্রটির অফিসে যান। সেখানে প্রথমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৫২০ টাকা করে নেয়। পরে চাকরির নিশ্চয়তা ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বিমা পলিসি খুলতে বাধ্য করে।
ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে সাড়ে ১৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ইন্স্যুরেন্স করাতে প্রলুব্ধ করত চক্রটি।সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে সাভার মডেল থানার শিমুলতলা সুপার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪-এর একটি অভিযানিক দল।
গ্রেপ্তাররা হলো এরশাদ শেখ (৩১), নাঈম শেখ (২৬), শহিদুল্লাহ (২৩), ইলিয়াস আহম্মেদ (২৫), জামাল উদ্দিন (৫২), জিয়াউর রহমান (২৫), মহসিন কবির (৪২), কামরুল শেখ (১৯), আজিজুল ইসলাম (২০), হুমায়ূন শেখ (২১), রাহাত ওরফে অনিক (১৯), মাওলানা মাইনুদ্দিন (২৩), বারহাম মিয়া (২০), হিজবুল্লাহ (১৯) ও চান মিয়া (১৯)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, দুটি প্রিন্টার, ১৫টি রেজিস্টার, ১৪টি মোবাইল, ১৪টি সিম কার্ড, ৯টি সিল, ৩০টি ভিজিটিং কার্ড, চারটি আইডি কার্ড, দুটি ব্যানার, ২৫০টি বায়োডাটা ফরম, ২০০টি লিফলেট, একটি ক্যাশ ভাউচার এবং ৮টি আবেদন ফরম জব্দ করা হয়।মঙ্গলবার র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান এ তথ্য জানান।তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা এ ধরনের প্রতারণার কথা স্বীকার করেন এবং চাকরিপ্রত্যাশী, বেকার, অসহায় লোকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করার কথা স্বীকার করেছেন তারা।
এ প্রতারকচক্র জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে ফুলটাইম, পার্টটাইম চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে। বিজ্ঞাপন দেখে চাকরিপ্রত্যাশী শত শত তরুণ-তরুণী ও ছাত্রছাত্রী সরল মনে বিশ্বাস করেন। প্রথমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৫২০ টাকা করে নেয়।
পরে চাকরির নিশ্চয়তা ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করত।ইমরান খান বলেন, চাকরি পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা-যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে তাদের টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি, মারধর এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হতো।
এ প্রতারক চক্রের সদস্যরা এর আগেও প্রতারণার দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।