গ্লোবাল কার্বন প্রকল্পের প্রধান ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ুবিজ্ঞানী রব জ্যাকসন জানিয়েছেন, মিথেন জলবায়ুর জন্য বড় একটি হুমকি, অথচ বিশ্ব বিষয়টিকে উপেক্ষা করছে। গত এক দশকে সবচেয়ে বেশি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে মিথেন। মিথেন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের লড়াইয়ে মানুষ কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারে।
এই বিষয়ে জলবায়ুবিজ্ঞানী বিল হেয়ার জানিয়েছেন, প্রাক্-শিল্প যুগ থেকে বর্তমান বিশ্বের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার মধ্যে রাখতে হবে। এ জন্য বিশ্বের কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গমন প্রায় অর্ধেক ও মিথেন এক-তৃতীয়াংশের বেশি কমাতে হবে। মিথেন নির্গমনের বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এশিয়ার বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে চীন ও ভারতে সবচেয়ে বেশি মিথেন নির্গমন হচ্ছে বলে জানানো হয়।
প্রাকৃতিক গ্যাসের মধ্যে অন্যতম মিথেন গ্যাসের মাত্রা বাড়ার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত দুই দশকে প্রাকৃতিক জলাভূমি থেকে বায়ুমণ্ডলে মাত্র ২ শতাংশ মিথেন নির্গমন হলেও মানুষের মাধ্যমে হয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ।
এর ফলশ্রুতিতে প্রাক্-শিল্প যুগের তুলনায় বর্তমানে বাতাসে মিথেনের মাত্রা ২ দশমিক ৬ গুণ বেশি রয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো থেকে শুরু করে বড় আকারের কৃষি খামারের মাধ্যমে মানুষ মিথেন নির্গমন বেশি করছে।
দ্রুত মিথেনের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের বহুমুখী প্রভাবের মুখোমুখি হবে বিশ্ব। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটারসে’ এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সাধারণভাবে বিশ্বে মিথেন গ্যাসের প্রধান উৎস হিসেবে কৃষিকাজ ও গ্রামীণ জলাভূমিকে দায়ী করা হয়। এখন শিল্প খাত, কৃষি কিংবা বর্জ্য ও বর্জ্যমিশ্রিত পানির মাধ্যমেও মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। মিথেন গ্যাস গ্রাম ও শহরের বাতাসকে বিপজ্জনক করে তুলছে। একই সঙ্গে তা বিশ্বের তাপমাত্রাও বাড়াচ্ছে।
গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত ২০ বছরে কয়লা, তেল ও গ্যাস খনি থেকে মিথেন নির্গমনের হার বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। বর্জ্যের কারণে ২০ শতাংশ ও কৃষিকাজের জন্য বেড়েছে ১৪ শতাংশ।