রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে সুখবর দেওয়ার কথা জানিয়েও বাস্তবে কোনো সুখবর দিতে পারেননি ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (চীনা রাষ্ট্রদূত) বলেছিলেন সুখবর দেবেন। কিন্তু সুখবর তেমন নতুন কিছু দিতে পারেননি।
সুখবর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, আশা করছিলাম। কিন্তু এখনো কিছু হয়নি। রাষ্ট্রদূত শুধু বলেছেন, তারা (মিয়ানমার) এখনো এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে রোহিঙ্গাদের নেওয়ার জন্য। ওটাই সুখবর। ’
তবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় আছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের। তিনি বলেন, ‘এত দিন ধরে যে অবস্থা, মনে হয় না তাদের সে আগ্রহ আছে। এর আগে দুবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি।
পর পর দুইবার উদ্যোগ নিয়েও রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠাতে পেরে এখন আর প্রত্যাবাসনের দিন-তারিখ বাংলাদেশ প্রকাশ করতে চায় না। ’ চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের প্রথম দল মিয়ানমারে কবে ফিরবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এখনো কিছু যাচাই-বাছাই বাকি। তারিখও চূড়ান্ত হয়নি। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, আপনারা যে প্রজেক্ট (ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ) নিয়েছেন, সেটা অনেক দিন ধরে ঝুলে আছে। এটা ভালো না। আমাদের কত আশা।
আমরা শুধু চিন্তা করি এ মাসে হবে; ওই মাসে হবে। এ জন্য একটা তাগাদা দেওয়া প্রয়োজন। ’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘তারা (চীন) চেষ্টা করছে। তারা (চীন) তো ওই দেশের মালিক নয়। এ সমস্যা মিয়ানমার করেছে। তাদেরকেই সমাধান করতে হবে। এর বিকল্প কোনো কিছু নেই। ’
তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে মূলত রোহিঙ্গা নিয়ে।
মন্ত্রী বলেন, ‘চীনকে বলেছি, ‘সম্প্রতি সীমান্তের শূন্যরেখায় প্রায় পাঁচ হাজারের মতো রোহিঙ্গা আছে। আমরা বলেছি, ওদের মিয়ানমারের ভেতরে নিয়ে যাও। কারণ এগুলো এখানে থাকলে আমাদের একটা ভয় থাকে। ওদের শূন্যরেখায় রাখা যাবে না। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল তা জান্তা কর্তৃপক্ষও মেনে নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আগের যে চুক্তি হয়েছে সে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি আছে মিয়ানমার। যাচাই-বাছাই করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার। তারা এখন নিরাপত্তা দেওয়া এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির কথা বলছে।