সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর বাজারে সরবরাহে সংকট না থাকলেও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

প্রতিনিধির / ১৯৬ বার
আপডেট : শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২
রাজধানীর বাজারে সরবরাহে সংকট না থাকলেও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম
রাজধানীর বাজারে সরবরাহে সংকট না থাকলেও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ প্রচুর থাকায় দাম কমের দিকে। গোল বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পাকা টমেটো ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এছাড়া ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৭০ টাকা, মুলা ৩৫-৪৫ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় কম। লাউ আকারভেদে ৫০-৮০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া মাঝারি আকারের ফুল কপি ৪০-৬০ টাকা ও আলু ২৮ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কাঁচামরিচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯৫টাকায়। এছাড়া কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা।

রাজধানীর বাজারে সরবরাহে সংকট না থাকলেও বেড়েছে চাল, আটা ও মাছের দাম। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও রায়েবাগ বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭৬ টাকায়। যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে এক টাকা বেড়েছে। ব্রি-২৮ (মোটা চাল) প্রতি কেজি ৫৯ থেকে ৬২ টাকা, খোলা চিনিগুঁড়া ১৩০-১৪০ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৮২ টাকা, লাল চাল ৭৯-৮৫ টাকা, কাটারি আতপ ৭৭ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যাত্রাবাড়ী বাজারে একজন চাল বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে আসতে আরও কিছুদিন লাগবে। তখন দাম কমবে।যাত্রাবাড়ী রাইস এজেন্সির মালিক মো. বোরহান হোসেন বলেন, খুচরা মিনিকেট ৬৯ থেকে ৭৮ (মানভেদে)। নাজিরশাল ৭০-৭৮টাকা। প্রতি কেজি চালে গত সপ্তাহের চেয়ে ১টাকা বেড়েছে। খোলা আটা ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেট আটা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা। আটা বিক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, হঠাৎ করেই বাড়লো আটার দাম।

বাজারে দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে মসুরের ডালের কেজি ছিল ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০ টাকায়। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা। বাজারে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮-১৮০টাকায়। খোলা সোয়াবিন তেল ১৫৮-১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রির কথা থাকলেও ৭-৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।রাজধানীর খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি ১১৫-১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদি দোকানি মো. কবির বলেন, কোম্পানি থেকে চিনির সরবরাহ কম। এক সপ্তাহ আগে অর্ডার দিয়েছিলাম আজকে দিয়ে গেলো।

বড় ইলিশ প্রতি কেজি ১৬০০ থেকে ১৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ থেকে ৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি, এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি, ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আইড় প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শোল ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া ১৭০ ২৩০টাকা কেজি, মাঝারি আকারের রুই ২৯০- ৩৫০ টাকা, বড় আকারের রুই ৫০০-৫৫০ টাকা, গুঁড়া চিংড়ি ৪৫০-৬০০ টাকা, কাঁচকি ৩০০-৪০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ী বাজারে মাছ কিনতে এসেছেন রোকন গাজী। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে মাছের দাম বেশি মনে হচ্ছে। আমাদের বেতন তো বাড়ছে না। এখন ভালো মাছ কম কিনি।সবজি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, সবজির দাম নির্ভর করে বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির সরবরাহের ওপর। এখন শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তাই আগের সপ্তাহের চেয়ে কম দামে বিক্রি করছি।

এক সপ্তাহ আগে বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকা কেজি দরে। আজও একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে কিছু দোকানি সুযোগ বুঝে দাম বেশিও নিচ্ছেন। যাত্রাবাড়ী বাজারে সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৯০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। মুরগির লাল ডিম ডজনে কমেছে ৫ টাকা করে। আজ ১৪৫টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া মুরগির সাদা ডিম ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ২১৫-২২০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৩৪০-২৪০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মুরগি ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে যে দামে বিক্রি করেছি, আজও একই দামই আছে। তবে কেজিতে পাঁচ টাকা কমবেশি হয়। মুরগি যে দামে কিনি আমরা সেরকম দামেই বিক্রি করি। পাইকারদের ওপর দাম নির্ভর করে।বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৮০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকায়।

এদিকে টিসিবির দৈনিক বাজার পণ্যমূল্যে দেখা যায়, সাত দিনে প্রতি কেজি মসুর ডাল ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। কেজিতে আটার দাম বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, ময়দা ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ভোজ্যতেল সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ, আদা সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ, রসুন ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, শুকনা মরিচ ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ, হলুদ ২ দশমিক ১৭ শতাংশ, ছোলা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, ধনিয়া ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, জিরা ৫ শতাংশ এবং প্রতি কেজি লবঙ্গ ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি চিনির দাম ২ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি কেজিপ্রতি লবণের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

এ বিষয়ে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, প্রতিদিন বাজার তদারকি করা হচ্ছ। কোনো অনিয়ম পেলে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ