মধ্যনগর উপজেলার সাতুর নতুন বাজারের পল্লী চিকিৎসক রানা মাহমুদের মাধ্যমে এই কার্যক্রম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পরিচালিত হয়েছিল। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় সেই কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর মধ্যনগর বাজারের আরেক পল্লী চিকিৎসক সুজিত রায় আবার নতুন করে এই কার্যক্রম শুরু করেছেন।
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে সুইস ব্যাংকে জমানো কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করা হবে বলে প্রলোভন দেখাচ্ছে অহিংস গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামের একটি কথিত এনজিও। তবে ঋণ পেতে হলে সার্বিক তথ্যের একটি ফরম পূরণের পাশাপাশি জমা দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। কারো কারো কাছে চাওয়া হচ্ছে টাকাও। উপজেলার চার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এমন অভিনব প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে সংস্থাটি।
এরই মধ্যে বিভিন্ন গ্রামের সহজ-সরল মানুষ তাদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষিত ও স্মার্ট যুবক দেখে উপজেলাভিত্তিক সংগঠক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষকে বোঝানো হচ্ছে, বাংলাদেশের যেসব কালো টাকা সুইস ব্যাংকে জমা পড়ে আছে, সেগুলো কিছুদিনের মধ্যেই উদ্ধার করা হবে। পরে তা গরিব-অসহায় কর্মমুখী মানুষের মধ্যে বিনা সুদে বিতরণ করবে তারা।
এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে জনপ্রতি দেওয়া হবে এক লাখ টাকা। আর যারা মোটামুটি স্বাবলম্বী কিংবা ব্যবসায়ী তাদের দেওয়া হবে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ। আর ঋণ পেতে কোনো জামানতের প্রয়োজন হবে না। ২০ জন সদস্য একজন সংগঠকের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে জমা দিলেই সুদ ছাড়াই মিলবে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ। পরে কিস্তিতে আসল টাকা পরিশোধ করলেই হবে। সুদবিহীন ঋণের কথা শুনে গ্রামের সহজ-সরল লোকজন ফরম পূরণ করে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংগঠককে খুশি করতে কেউ কেউ দিচ্ছে টাকাও।
উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণউড়া গ্রামের মানিক রায় বলেন, ‘গত বুধবার দুপুরে আমার চায়ের দোকানে পাঁচটি ফরম দিয়ে গেছেন একজন লোক। এই ফরমগুলো পূরণ করে জমা দিলে আমাদের ঋণ দেওয়া হবে। তবে আমরা কাউকে কোনো টাকা দিইনি। ’
এ ব্যাপারে চক্রের মূল হোতা পল্লী চিকিৎসক সুজিত রায় বলেন, ‘আমাকে ঢাকার ধানমণ্ডির একটি অফিস থেকে কিছু ফরম দেওয়া হয়েছে। সেই ফরমগুলো পূরণ করে জমা দিলেই ঋণ দেওয়া হবে। আমরা বিভিন্ন গ্রামে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ’মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’