কখনও ভ্রমণ ভিসায়, কখনও ওমরাহ্ এভাবে ১৩ হাজার বাংলাদেশিকে ভুয়া ওয়ার্ক পারমিটে বিদেশে পাঠিয়েছে একটি চক্র। আর যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাদেরকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে খোদ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এই সুযোগে বিদেশগামীদের কাছ থেকে চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে অবৈধভাবে দেশের বাইরে গিয়ে কাজ না পেয়ে, ফিরে এসে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।
আত্মীয়-অনাত্মীয় এমন বহু মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে জোগাড় করেছিলেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা। তা নিয়েই কাজের খোঁজে কিরগিজস্তানের পথে রওনা দেন দোহারের দিনমজুর ইয়াসিন। এরপরে খেয়ে না খেয়ে আড়াই মাসের একরকম বন্দী জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরেন শূণ্য হাতে।
ভালো বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে পদ্মা পাড়ের এমন ২৭ জনকে ভ্রমণ ভিসায় কিরগিজস্তান পাঠায় একটি চক্র। তাদের অনেকের সাথেই কথা হয়। যারা অন্তত ২-৩ দেশ ঘুরে একসময় কিরগিজস্থান পৌছান। সেখানে যেয়ে শুরু হয় মানবেতর জীবন। সাথে দালালের হুমকি আর পুলিশি হয়রানি। সবশেষ বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে ফিরতে হয় দেশে।
প্রশ্ন হলো ভ্রমণ ভিসার আড়ালে কারা এমন প্রতারণা করছে? ভুক্তভোগীদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বনানীতে জাহান ট্রাভেল এজেন্সির খোঁজে চ্যানেল 24। কিন্তু সেখানে যেয়ে ভুইফোর এই প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্বই মেলেনি। একসময় ফোনে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক জাহানের সাথে। ভুল স্বীকার করেই দায় সারেন তিনি।
গেলো দুই বছরে এভাবেই ভুয়া ওয়ার্ক পারমিটে প্রায় ১৩ হাজার কর্মীকে কিরগিজস্থান যাবার ছাড়পত্র দিয়েছে বিএমইটি। যা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কেউই ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি।
এছাড়াও বরাবরের মতোই প্রতারণার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন।
অভিবাসী উন্নয়ন প্রোগ্রামের চেয়ারপার্সন শাকিরুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরেও দৃশ্যমান পরিবর্তন নেই। বর্তমান সরকার অভিবাসন সেক্টরে যেসব সংস্কারের কথা বলেছে, সেখানে হাত দিতে হবে।
কাজের জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি রয়েছে ২ হাজার ৮ শ’টির মতো রিক্রুটিং এজেন্সির। কিন্তু দেশে ট্রাভেল এজেন্সির সংখ্যা কতো তার সুনির্দিষ্ট কোন হিসাব সরকারের কাছে নেই।