রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেবার পর সে দেশে যুদ্ধবিমান ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেনের উপর আরও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৫০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী, ৮৫ শতাংশ হামলাই প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। তবে জ্বালানি অবকাঠামোর উপর হামলার ফলে রাজধানী কিয়েভ, ওডেসা ও ভিনিৎসিয়া অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। রুশ স্থলবাহিনীও ইউক্রেনের পূর্ব প্রান্তে ৬০টিরও বেশি শহরের উপর হামলা চালিয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমা বিশ্বের উদ্দেশ্যে আরও অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। রাতের ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, একমাত্র উপযুক্ত অস্ত্র দিয়েই রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করা সম্ভব।
তার মতে, ইউক্রেনের শহরগুলোর উপর সন্ত্রাসবাদীদের ব্যবহার করা প্রতিটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র, প্রতিটি ইরানি ড্রোন আরও অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তার পক্ষে যুক্তি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ব্যাটেল ট্যাংক দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।কানাডা ও ইউরোপের কিছু দেশও নিজেদের ভাণ্ডার থেকে জার্মানিতে তৈরি লেপার্ড ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবার উদ্যোগ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০টি ট্যাংক পেতে পারে সে দেশ। মার্চ বা এপ্রিল মাসেই জার্মানির লেপার্ড-২ ট্যাংক ইউক্রেনে পৌঁছে যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পর এবার ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমারু বিমান পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এক উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ এর মতো যুদ্ধবিমানের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেছেন।সেই সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার ভয় না করে ইউক্রেনের গোটা ভূখণ্ডেই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন ও এয়ার ডিফেন্স প্রণালী বসানোর ছাড়পত্র দেবার আহ্বান জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাটেউৎস মোরাভিয়েৎস্কি।ন্যাটো ইউক্রেনকে যুদ্ধ বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলে তিনি পোল্যান্ডের সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি ন্যাটোর উদ্দেশ্যে আরও সাহসি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের মতে, ইউক্রেনকে ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়লো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। রাশিয়া বার বার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ‘প্রক্সি’ যুদ্ধ চালানোর অভিযোগ করে চলেছে।