শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

ইয়েমেনের তেল চুরি,সৌদি জোটের তেলবাহী জাহাজে হামলার হুঁশিয়ারি :ইয়েমেন প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির / ২৫২ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২
ইয়েমেনের তেল চুরি,সৌদি জোটের তেলবাহী জাহাজে হামলার হুঁশিয়ারি :ইয়েমেন প্রধানমন্ত্রী
ইয়েমেনের তেল চুরি,সৌদি জোটের তেলবাহী জাহাজে হামলার হুঁশিয়ারি :ইয়েমেন প্রধানমন্ত্রী

ইয়েমেন হচ্ছে সবচেয়ে দরিদ্র আরব দেশ। আট বছর ধরে দরিদ্র এই মুসলিম দেশে আগ্রাসন চালাচ্ছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি রাষ্ট্র। এই আট বছরে সেখানে দারিদ্র ও ক্ষুধা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। সৌদি জোট সেদেশে বোমা হামলার মাধ্যমে অপূরণীয় ক্ষতি করার পাশাপাশি দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকা দখলে রেখেছে। দখলীকৃত এলাকাগুলো খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। ইয়েমেনের বিভিন্ন অঞ্চল দখলে রেখে দু’টি লক্ষ্য হাসিল করছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এক- ঐসব অঞ্চলের ভৌগোলিক কৌশলগত অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে। দুই- তেল ও গ্যাসসহ খনিজ সম্পদ লুট করে নিজেদের সম্পদ বাড়ানোর পাশাপাশি ইয়েমেনিদেরকে চিরদিনের জন্য দরিদ্র করে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইয়েমেনের ন্যাশনাল সালভেশন সরকারের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল আজিজ বিন হাবতুর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইয়েমেনের তেল চুরি অব্যাহত থাকলে সৌদি জোটের তেলবাহী জাহাজগুলোতে হামলা চালানো হবে। গত সোমবার ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী তেল চুরি করতে আসা একটি জাহাজকে হটিয়ে দেওয়ার পর তিনি এ হুঁশিয়ারি দিলেন।

সোমবার ইয়েমেনের পূর্বাঞ্চলীয় হাজরামাউত প্রদেশের প্রধান শহর মুকালার পূর্ব দিকে অবস্থিত আল দাব্বা বন্দরে ভিড়তে চেয়েছিল একটি জাহাজ। এরপর সশস্ত্র বাহিনীর সতর্কতামূলক হামলার পর সেটি পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এই বন্দরটি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বাধীন আগ্রাসী জোটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই জাহাজটিতে করে ২০ লাখ ব্যারেল ইয়েমেনি জ্বালানি তেল চুরি করার পরিকল্পনা ছিল।

ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল আজিজ বিন হাবতুর জানিয়েছেন, সৌদি জোট আমেরিকার সহযোগিতায় এ পর্যন্ত ইয়েমেনের তেল ও গ্যাস খাত থেকে এক হাজার ৪০০ কোটি ডলার লুট করেছে এবং এই সম্পদ সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।

সৌদি জোটের পাশাপাশি পশ্চিমা কোম্পানিগুলোও ইয়েমেনের খনিজ সম্পদ লুটপাটের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন থেকে জ্বালানি তেল সরাসরি ইউরোপেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আল দাব্বা বন্দর থেকে ইয়েমেনি তেল চুরি করে ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ন্যাশনাল সালভেশন সরকারের পক্ষ থেকেও প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ইয়েমেনের সালভেশন সরকার কয়েকটি আন্তর্জাতিক কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে ডেকে নিয়ে এ ধরণের তৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

সোমবারের ঘটনার পর ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রীর বার্তাটি সুস্পষ্ট। ভবিষ্যতে তেল চুরির জন্য আসা জাহাজকে তারা আর সতর্ক করবে না, সরাসরি তাতে হামলা চালাবে। তিনি বলেছেন, ইয়েমেনের জনগণ না খেয়ে থাকবে আর সৌদি জোট দেশের সম্পদ লুটে নিয়ে যাবে তা হতে পারে না। এটা হতে দেওয়া হবে না।

এ অবস্থায় সৌদি জোট যদি ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব না দিয়ে তেল চুরি অব্যাহত রাখে তাহলে ইয়েমেন যুদ্ধ আবারও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন। এর আগে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী প্রতিপক্ষের নানা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আঘাত হেনে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছে। কাজেই ইয়েমেনিদের হুমকিকে গুরুত্ব না দেওয়াটা হবে চরম বোকামি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ