পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেজিং পৌঁছাবার কয়েকঘণ্টা আগে জার্মানি অভিযোগ করে যে তাইওয়ান নিয়ে চীন উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।বুধবার জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাইওয়ান ঘিরে চীন যে সামরিক মহড়া করছে, তাতে শুধু উত্তেজনা বাড়ছে তাই নয়, এর ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে সংঘর্ষও শুরু হয়ে যেতে পারে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবকের বেজিং পৌঁছাবার কয়েক ঘণ্টা আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এ বিবৃতি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা তাইওয়ান খাঁড়ির পরিস্থিতি নিয়ে খুবই চিন্তিত। আমরা আশা করি যে সব পক্ষই এ অঞ্চলে স্থায়িত্ব ও শান্তি বজায় রাখবেন। এটা চীনের সম্পর্কেও সমানভাবে খাটে। আমাদের মনে হচ্ছে, চীন যেরকম ভয় দেখানোর জন্য সামরিক কার্যকলাপ করছে, তার থেকে অনিচ্ছাকৃত সংঘর্ষ হতে পারে।’তিনি জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে যাতে উত্তেজনা কমে, জার্মানি সেই লক্ষ্যে কাজ করবে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইঙ্গ ওয়েন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন। এরপরেই তাইওয়ান-ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করে চীন। সোমবার ওই মহড়া থেমেছে। মহড়ায় পিপলস লিবারেশন আর্মি তাইওয়ানকে অবরোধ করে রেখেছিল।১৯৪৯ সালের গৃহযুদ্ধের সময় চীন ও তাইওয়ান আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের এলাকা বলে মনে করে। তারা জোর করে তাইওয়ানকে চীনের সাথে যুক্ত করার কথাও বলেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বেজিং গেছেন বেয়ারবক। সেখানে তিনি সেখানে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে ইউক্রেন যুদ্ধ ও তাইওয়ান নিয়ে আলোচনা করবেন।ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর চীন সফর শেষ হওয়ার পরেই বেয়ারবক সেখানে যাচ্ছেন। মাক্রোঁ চীন সফরে গিয়ে বলেছিলেন, তাইওয়ান নিয়ে ইউরোপ যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনুসারে চলবে তার কোনো মানে নেই। মাক্রোঁর এ কথায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গেছে।
বেজিংয়ে বেয়ারবক চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করবেন। তিনি জার্মান কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথেও দেখা করবেন।চীন থেকে বেয়ারবক দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবেন এবং ওই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করবেন। রোববার তিনি জাপানে সাতটি দেশ জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত গ্রুপ অব সেভেন বা জি-৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দেবেন।
চীনে বেয়ারবকের সাথে ইউরোপিয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র-নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেলও যাবেন।ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলাও চীন সফরে গেছেন। শুক্রবার তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সাথে বৈঠক করবেন। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পরিবেশ ও শান্তিপ্রয়াস নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হবে। মার্চে এই সফর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লুলার নিউমোনিয়া হওয়ায় সফর পিছিয়ে দিতে হয়।