ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগদান এড়াতে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন রাশিয়ার পুরুষরা। সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে রাষ্ট্রীয় সমন পাওয়ার পরই পালাতে শুরু করেন অনেকে। তারা সড়কপথে জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ডে চলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার আকাশপথে ইস্তাম্বুল, বেলগ্রেড ও দুবাইয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন। তবে লোকজনের দেশ ছেড়ে পলায়নের খবরকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাশিয়া ছাড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে অনেকে জড়ো হয়েছেন জর্জিয়া সীমান্তে। সেখানে গাড়ির সারি জমেছে। গাড়ির জটলা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ জর্জিয়ায় যেতে রুশদের কোনো ভিসা লাগে না। এ সুযোগটিকেই কাজে লাগাচ্ছেন যুদ্ধবিরোধী রুশরা। জর্জিয়ায় ঢুকে যাওয়া রুশদের একটি দল জানিয়েছেন, প্রায় সাত ঘণ্টা গাড়ির সারিতে থেকে জর্জিয়া সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন তারা। জর্জিয়া সীমান্তে এক রুশ নাগরিক বলেন, কেবল পাসপোর্টটি সাথে নিয়েই সীমান্তে চলে এসেছি। সাথে আর কিছু আনিনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন গত বুধবার ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন। সেজন্য তিন লাখ নতুন সেনা সমাবেশের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। পরে জানা যায়, সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য সাবেক সেনাসদস্যসহ তিন লাখ লোককে সমন পাঠানো হয়েছে। যুদ্ধে যাওয়া এড়াতে এরপরই পালাতে শুরু করে রাশিয়ার পুরুষরা। শুধু জর্জিয়ায় নয়, যুদ্ধে যাওয়া এড়াতে আর্মেনিয়া ও ফিনল্যান্ডসহ অনেক দেশেই চলে যাচ্ছেন রুশরা। আর্মেনিয়ায় চলে যাওয়ার জন্য ঘরছাড়াদের একজন দিমিত্রি। স্ত্রী-সন্তান রেখেই পালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দিমিত্রি বলেন, যুদ্ধে যেতে চাই না আমি। যুক্তিহীন এই যুদ্ধে প্রাণ খোয়াতে চাই না। ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের ভাইদের হত্যার শামিল।
এরই মধ্যে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীদের আটকের পর জোর করে সেনাবাহিনীতে নাম লেখানো হচ্ছে। পুতিনের ঘোষণার পর তার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বুধ ও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শুরু হয় রাশিয়ায়। বিক্ষোভ থেকে প্রায় এক হাজার ৪০০ রুশ নাগরিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিক্ষোভের সময় সবচেয়ে বেশি গ্রেফতার করা হয় মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ শহর থেকে।
এ দিকে জার্মানি ইঙ্গিত দিয়েছে, যুদ্ধ এড়াতে পালিয়ে আসা রুশ নাগরিকদের আশ্রয় দেবে তারা। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার বলেন, কঠোর দমনপীড়নের হুমকিতে থাকা রুশদের জার্মানিতে স্বাগত জানানো হবে। তবে লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্র জানিয়ে দিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া রুশদের আশ্রয় দেবে না তারা।