জার্মানিতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার দেশ চায় সামরিক জোটে যাতে কোনো রকম অস্পষ্টতা না থাকে। এদিকে আগামী সপ্তাহে ন্যাটো সম্মেলনের আগে ইউরোপ সফর করবেন বাইডেন।ন্যাটো সদস্য দেশগুলো তাদের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাশিয়ার আগ্রাসন শেষ হলে নিজেদের চূড়ান্ত সদস্য পদ নিয়ে সামরিক জোট থেকে স্পষ্ট অঙ্গীকারের জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেন।
জার্মানির ডিপিএ বার্তা সংস্থাতে জার্মানিতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলেক্সি মাকেইয়েভ ন্যাটোকে এই বিষয়ে অস্পষ্টতার অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। তার কথা, ‘ভিলনিয়াসে শীর্ষ সম্মেলনে আমরা ন্যাটোতে যোগদানের জন্য একটি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন আমন্ত্রণ এবং নির্দেশনা আশা করি।’২০০৮ সালে বুখারেস্টে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের সময় যে ভুল হয়েছিল, তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, এমনটাই বলেন মাকেইয়েভ। শীর্ষ সম্মেলনের সময় জোট যখন কিয়েভের সদস্য পদ আকাঙ্ক্ষাকে স্বাগত জানায়, তখন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল জোটে দেশটির দ্রুত যোগদানের বিরোধিতা করেন।
তিনি ডিপিএকে বলেন, ‘যদি ইউক্রেন ইতিমধ্যে ২০১৪ সালে ন্যাটোর সদস্য হয়ে যেতো, তাহলে ক্রিমিয়ান সংযুক্তিকরণ, দনবাসের যুদ্ধ, রাশিয়ার এই আগ্রাসন থেকে যুদ্ধ এসব কিছুই হতো না। ইউরোপের বিরুদ্ধে রুশ আগ্রাসন বন্ধ করার একমাত্র উপায় হলো ২০২৩ সালের ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া।’ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, লিথুয়ানিয়ার রাজধানীতে আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে কিয়েভকে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হবে না।
ওয়াগনার বিদ্রোহে রুশ সংবাদমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়াযুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ওয়াগনার বিদ্রোহ রুশ সংবাদমাধ্যমকে চমকে দিয়েছে।মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া তিনটি পর্যায়ে এসেছিল। ‘প্রাথমিকভাবে, তারা অবাক এবং অপ্রস্তুত ছিলো। তা সত্ত্বেও রাশিয়ান টিভি তার স্বাভাবিক সময়সূচি বজায় রেখেছে।’
একবার বিদ্রোহ শেষ হয়ে গেলে, রাশিয়ান গণমাধ্যম নিরাপত্তা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা সংক্রান্ত দাবিগুলো ‘ঠিক’ করার চেষ্টা করেছিল। একই সঙ্গে তারা প্রচার করেছিল, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘রক্তপাত এড়িয়ে বিদ্রোহকে ব্যর্থ করে জয়ী হয়েছেন।ব্রিটিশ মন্ত্রণালয়ের মতে, তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়টি এক সপ্তাহ পরে আসে। এতে প্রিগোজিনের তাৎপর্য, তার বিদ্রোহের তাৎপর্যকে খাটো করা হয়। প্রিগোজিনের খ্যাতিকেও কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছিল সংবাদমাধ্যমগুলো। ওয়াগনারের টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোর নীরবতাও উল্লেখ করা হয়েছে। রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের ফলে এটি আচমকাই ঘটেছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ন্যাটো সদস্যদের তাদের শীর্ষ সম্মেলনের সময় ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।জাখারোভা ইউক্রেনকে প্লান্টের ‘পরিকল্পিতভাবে ক্ষতির জন্য’ অভিযুক্ত করেছেন। তিনি ওই প্লান্টে কোনো কিছু ঘটার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই পরস্পরের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে।মঙ্গলবার লিথুয়ানিয়ায় শুরু হতে যাওয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের আগে রবিবার ইউরোপে সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার প্রথম গন্তব্য হবে লন্ডন।
সোমবার ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করা তার এজেন্ডার অন্যতম অংশ। বিশ্লেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, শীর্ষ সম্মেলনের আগে কিয়েভের দুই উৎসাহী মিত্রের ন্যাটোতে যোগদানের দাবিগুলো ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করা দরকার।উইন্ডসর ক্যাসেলে তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে বাইডেনের। তারা পরিবেশ ও জলবায়ু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।