ক্রেমলিনের নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি নিকোলাই পাত্রুশেভ রাশিয়ার একটি টেলিভিশনকে জিানিয়েছেন, কৃষ্ণ সাগরে ডুবে যাওয়া মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের চেষ্টা করবে রাশিয়া।স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার একটি রুশ সুখোই-২৭ জেট বিমানের সঙ্গে মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের ধাক্কা লাগে। সংঘর্ষের ফলে মানববিহীন মার্কিন ড্রোনটি কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার জঙ্গি বিমানের ধাক্কায় ড্রোনটি অকেজো হয়ে পড়ে। এরপরেই দূর থেকে এই ড্রোন পরিচালনা করা পাইলটরা ড্রোটি কৃষ্ণসাগরে ফেলে দিতে বাধ্য হয়। তবে মস্কো এমন দাবি অস্বীকার করেছে।স্থানীয় সময় গতকার বুধবার এই ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ খোঁজার চেষ্টার কথা রাষ্ট্রীয় টিভিতে জানিয়েছেন নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি নিকোলাই পাত্রুশেভ। তিনি বলেন, ‘এটি (ড্রোন) আমরা উদ্ধার করতে পারব কিনা জানি না। তবে আমাদের এটা করতেই হবে। আমরা অবশ্যই এটা করব।’
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রও ড্রোনটির অবস্থান শনাক্ত করতে চায়। তবে এটি উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে। ড্রোনটি অনেক গভীর পানিতে পড়ায় এটি উদ্ধার করা কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং হবে।তিনি বলেন, রাশিয়া যদি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারও করে, তাহলেও তারা যাতে এটা থেকে খুব বেশি গোয়েন্দা তথ্য পেতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইউএস এয়ার ফোর্সের ইউরোপ ও আফ্রিকার কমান্ডার জেনারেল জেমস হেকার বলেছেন, আমাদের এমকিউ-৯ ড্রোনটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় রুটিন অপারেশন চালাচ্ছিল। সেই সময় একটি রুশ বিমান এর সামনে এসে যায় ও ড্রোনটিকে ধাক্কা মারে। ফলে ড্রোনটি ভেঙে পড়ে। রুশদের এই অনিরাপদ ও অপেশাদার কাজের ফলে দুটি উড়োজাহাজ প্রায় বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছিল।মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, এই অঞ্চলে রুশ বিমানের মুখোমুখি হওয়া সাধারণ ঘটনা। প্রায়ই ঘটে থাকে। তবে এই ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ছিল অনিরাপদ ও অপেশাদার। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল বেপরোয়া পদক্ষেপ।
ওদিকে রাশিয়া অভিযোগ করে বলেছে, মার্কিন ড্রোনটি ইউক্রেইনের জন্য তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় নজরদারি করছিল। বুধবার মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ড্রোনটি আকাশে বেশ কয়েকবার ‘তীক্ষ্ণ মোড়’ নেওয়ার পর বিধ্বস্ত হয়। অন্যদিকে, ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনটি ইচ্ছা করে উস্কানিমূলকভাবে রাশিয়ার আকাশসীমায় উড়ানো হয়েছিল।’ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও এর পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে আগে থেকেই রাশিয়ার উত্তেজনার মধ্যে ঘি ঢেলেছে মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্তের এই ঘটনা।