উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য ঘাটতি এবং মানবিক সংকট বেড়ে যাওয়ার শঙ্কার মধ্যে অর্থনীতি এবং কৃষি খাতের উন্নয়নে ক্ষমতাসীন দলের কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক শুরু করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ায় নিষেধাজ্ঞা এবং কোভিড-১৯ লকডাউনের কারণে খাদ্যসংকট পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ জানায়, ওয়ার্কার্স পার্টির অব কোরিয়ার অষ্টম সেন্ট্রাল কমিটির সপ্তম পূর্ণাঙ্গ বর্ধিত বৈঠকে রবিবার সভাপতিত্ব করেছেন কিম। পল্লি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে বৈঠকে পর্যালোচনা হয়েছে। বৈঠক এখনো চলছে। কৃষি উন্নয়নের সঠিক কৌশল নির্ধারণে এ বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি বলে উল্লেখ করেছে কেসিএনএ। উত্তর কোরিয়ার খাদ্যসংকট পরিস্থিতি আরো নাজুক হওয়ার কথা গত ১৫ ফেব্রুয়ারিতেই জানিয়েছিল দক্ষিণ কোয়িরা।
এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের এই জরুরি বৈঠকে বসাটা কার্যত দেশটির মারাত্মক খাদ্য ঘাটতির কথা স্বীকার করে নেওয়া হিসেবেই ইঙ্গিত করছেন সিউলের কর্মকর্তারা। বন্যার মতো নানা প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে উত্তর কোরিয়ায় গত কয়েক দশক ধরেই খাদ্যসংকট চলছে। দেশটিতে ১৯৯০-এর দশকে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। তারপর থেকে বর্তমানে দেশটিতে খাদ্যের সহজলভ্যতা মানুষের ন্যূনতম চাহিদা মেটানোর পর্যায়েও নেই বলে গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ৩৮ নর্থ প্রোগ্রাম।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে নানা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলেও রয়েছে, যা দেশটির অর্থনীতিকে ভেঙে ফেলেছে। তার ওপর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোভিড-১৯ মহামারি ঠেকাতে উত্তর কোরিয়া লকডাউন আরোপ করায় দেশটিতে সীমিত পরিসরে চালু থাকা সীমান্ত বাণিজ্যও আরো অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার এই অর্থনৈতিক সংকটের কথা ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিল, দেশটির সেনাসদস্যদের রেশন কমানো হয়েছে। আর বর্তমানে জরুরি বৈঠক তারই ইঙ্গিত করে। সে সময় দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া কার্যত তাদের গুরুতর খাদ্যসংকটের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। ‘দেখে মনে হচ্ছে, তাদের খাদ্য পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়েছে।’